হাওজা নিউজ এজেন্সি: শিশুকে লালন-পালন করার ক্ষেত্রে যে বিষয় মনে রাখা জরুরী:
শিশু মানেই শিশু— এই সত্যটি স্মরণে রাখা জরুরি
যেভাবে একটি ছোট চারা গাছ থেকে প্রাচীন গাছের মতো আচরণের প্রত্যাশা করা যায় না, ঠিক সেইভাবে শিশুদের কাছ থেকেও প্রাপ্তবয়স্কদের মতো আচরণ আশা করা ভুল। শিশুর স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য হলো—অতি চঞ্চলতা, কৌতূহল, নড়াচড়া, খেলা, এলোমেলো করা, প্রশ্ন করা এবং শব্দ করা। এগুলো কোনো খারাপ আচরণ নয়; বরং তার সুস্থ বিকাশের লক্ষণ।
অধৈর্য নয়, গ্রহণই হলো মূল চাবিকাঠি
আমরা যখন এমন কারও সঙ্গে কথা বলি যার কান ঠিক আছে কিন্তু অসাবধানতার কারণে সে বুঝতে পারে না, তখন বিরক্ত হই। কিন্তু যার শ্রবণক্ষমতা কম, তাকে আমরা ধৈর্যের সঙ্গে বোঝাই। কারণ আমরা স্বীকার করি তার সীমাবদ্ধতা আছে।
শিশুর ক্ষেত্রেও একই কথা— আমাদের প্রথম দায়িত্ব হলো এই সত্যটি মেনে নেওয়া যে শিশু প্রাপ্তবয়স্ক নয়; তার সীমাবদ্ধতা ও চাহিদা ভিন্ন।
শিশুর ভুল, আলসেমি, দৌড়ঝাঁপ বা এলোমেলো আচরণকে যদি আমরা “সমস্যা” না ভেবে “স্বাভাবিক বিকাশের অংশ” হিসেবে দেখি, তাহলে পিতামাতার ধৈর্য বাড়বে এবং শিশুরাও নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে উঠবে।
চঞ্চলতা নয়, নিস্তব্ধতাই হতে পারে সমস্যা
অনেক সময় আমরা শিশুর দৌড়ঝাঁপ বা শব্দে বিরক্ত হই। অথচ মনোবিজ্ঞানীরা বলেন— শিশু যদি একেবারে চুপচাপ থাকে, তবেই উদ্বেগের কারণ আছে। চলাফেরা, খেলাধুলা, শব্দ করা, প্রশ্ন করা—এসব শিশুর মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধির প্রাকৃতিক অংশ।
যেমন, একটি শিশু খাবার না খেলে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি; তেমনি সে যদি হঠাৎ খুব স্থির হয়ে যায়, খেলাধুলা না করে—এটিও অস্বাভাবিক।
পিতামাতার জন্য পরামর্শ
• শিশুর বয়স ও মানসিক বিকাশ অনুযায়ী প্রত্যাশা করুন।
• প্রতিটি শিশুর শেখা, বোঝা ও বেড়ে ওঠার গতি আলাদা—এটি মেনে নিন।
• ভুল করলে বকা নয়, দিকনির্দেশ দিন।
• শব্দ বা দুষ্টুমিকে সমস্যা নয়, এনার্জির প্রকাশ হিসেবে দেখুন।
• মনে রাখুন—ধৈর্যই শিক্ষার সবচেয়ে কার্যকর উপকরণ।
শিশুশিক্ষার মূলভিত্তি হলো তাকে— (তার বয়স, সীমাবদ্ধতা, কৌতূহল এবং তার ‘শিশু হওয়া’র স্বাভাবিকতাকে) গ্রহণ করা। যখন আমরা এই সত্যটি মেনে নিই, তখন সন্তান লালন-পালন হয়ে ওঠে সহজ, আনন্দময় এবং ফলপ্রসূ।
আপনার কমেন্ট